SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

এসএসসি(ভোকেশনাল) - শ্রিম্প কালচার এন্ড ব্রিডিং-১ - দ্বিতীয় পত্র (দশম শ্রেণি) | NCTB BOOK

ক) চিংড়ির অবাধ চলাচলের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা

নার্সারি পুকুরের তলদেশ অগভীর ও স্বচ্ছ হওয়ায় সূর্যের আলো তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছায় ফলে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ যেমন: নাজাস, কারা (উচ্চতর জলজ উদ্ভিদ) জন্মায় যা চিংড়ির চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। আবার উপকূল অঞ্চলের ঘেরের তলা সমতল না হওয়ায় পানি ঘেরের সর্বত্র সমানভাবে থাকে না। এমনকি কোনো কোনো ঘেরে প্রায় ৩০-৪০ ভাগ এলাকায় কোনো পানিই থাকে না। ফলে ঘেরের অধিকাংশ এলাকা চাষের আওতার বাইরে থাকে এবং আয়তন অনুপাতে চিংড়ির উৎপাদন হ্রাস পায়। তাই পানি প্রবেশের মাধ্যমে ঘেরের সম্পূর্ণ এলাকাকে চাষের আওতায় এনে চিংড়ির অধিক উৎপাদন নিশ্চিত করা যায় ।

খ) চিংড়ির শ্বাস গ্রহণের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা

 বাগদা চিংড়ির স্বাভাবিক শ্বাস গ্রহণের জন্য পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ ৪-৮ পিপিএম থাকতে হয়। অক্সিজেনের সাথে পানিতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড, অ্যামোনিয়া, হাইড্রোজেন সালফাইড ইত্যাদি দ্রবীভূত থাকে। পানিতে দ্রবীভূত সকল গ্যাসের একটি নির্দিষ্ট মাত্রা রয়েছে। যেমন- আমোনিয়া 0.১ পিপিএম, হাইড্রোজেন সালফাইড ০.০৩ পিপিএম। পানিতে এই গ্যাসগুলোর পরিমাণ বেড়ে গেলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। ফলে ঘেরের চিংড়ি মারা যেতে পারে।

গ) প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য পানি ব্যবস্থাপনা

পানিতে ফাইটোপ্লাংকটনের উৎপাদনের হারকে প্রাকৃতিক উৎপাদনশীলতা বলে। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফাইটোপ্লাংকটন ঘেরের পানিতে প্রাথমিক খাদ্যের যোগান দেয় এবং চিংড়ির শ্বাস গ্রহণ ও অন্যান্য কাজের জন্য অক্সিজেন সরবরাহ করে। ফলে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণ ঠিক থাকে এবং অন্যান্য গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় না। ফাইটোপ্লাংকটন পানিতে দ্রবীভূত নাইট্রোজেন ও ফসফরাসকে নিজের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করে ফলে পানিতে বিষাক্ত গ্যাস উৎপাদন হয় না এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইটোপ্লাংকটন থাকায় আগাছা ও ক্ষতিকর উদ্ভিদ জন্মাতে পারে না। চিংড়ির অধিক উৎপাদনের জন্য পানিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ প্রাকৃতিক খাদ্য থাকা প্রয়োজন। এজন্য পানিতে নির্দিষ্ট মাত্রায় নাইট্রোজেন, ফসফরাস ও পটাশসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান উপস্থিত থাকতে হবে।

ঘ) চিংড়ির রোগ প্রতিরোধের জন্য পানি ব্যবস্থাপনা

পানিতে প্রচুর পরিমাণে রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণু বিদ্যমান থাকে। সুস্থ সবল চিংড়িকে জীবাণু আক্রমণ করতে পারে না। কিন্তু চিংড়ির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে রোগ জীবাণু চিংড়িকে সহজেই আক্রমণ করার উপযুক্ত পরিবেশ পায়। বসবাসের পরিবেশ উপযুক্ত না থাকলে সেখানে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায় এবং চিংড়িকে আক্রান্ত করে। চিংড়ির মাঝে যে কোনো রকম অস্বাভাবিকতা দেখা দিলেই প্রথমে পানির গুণাগুণ যেমন- পিএইচ, দ্রবীভূত অক্সিজেন, ক্ষারত্ব পরীক্ষা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নতুন পানি প্রবেশ করাতে হবে। নতুন পানি প্রবেশ করানোর সময় জীবাণুমুক্ত ও যথেষ্ট গুণাগুণসম্পন্ন পানি প্রবেশ করাতে হবে। সম্ভব হলে পরিশোধিত পানি ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া পানি পরিশোধনের জন্য ব্লিচিং পাউডার ট্রিটমেন্ট (২০- ২৫ পিপিএম হারে) করা যেতে পারে।

Content added By